৫ম শ্রেণির বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য এবং ভাষণ

- আপডেট সময় : ০৫:৫৭:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৩২ বার পড়া হয়েছে
স্কুল জীবনের প্রথম বড় বিদায় হলো প্রাথমিক সমাপনী বা ৫ম শ্রেণির বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য। সংক্ষেপে বললে, এটি হলো এমন এক ভাষণ যেখানে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, বন্ধু ও অভিভাবকদের প্রতি ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা ও ভবিষ্যতের স্বপ্ন প্রকাশ করা হয়। আমি নিজেও যখন ৫ম শ্রেণি থেকে বিদায় নিয়েছিলাম, তখন বুঝতে পেরেছিলাম স্কুল শুধু পড়াশোনার জায়গা নয়, বরং স্মৃতি, সম্পর্ক আর শেখার ভাণ্ডার।
৫ম শ্রেণির বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য: কেন গুরুত্বপূর্ণ?
একজন শিক্ষার্থীর জীবনে প্রথম বড় “বিদায়” খুব আবেগঘন। এই ভাষণে শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনার যাত্রা, বন্ধুদের সাথে কাটানো সময়, শিক্ষকদের অবদান এবং ভবিষ্যতের আশা তুলে ধরে। এটি শুধু বক্তৃতা নয়, বরং একধরনের স্মৃতিচারণ ও প্রতিশ্রুতি।
বিদায়ের অনুভূতি ও স্মৃতিচারণ
ভালোভাবে বলা যায়, বিদায় মানে চোখে জল আর হৃদয়ে অগণিত স্মৃতি। যেমন—আমরা ক্লাসে একসাথে পড়তাম, খেলাধুলা করতাম, টিফিন ভাগাভাগি করতাম। একদিন হঠাৎ বুঝতে পারলাম, এই মুহূর্তগুলো আর আগের মতো থাকবে না।
সেই সময় আমি আমার ভাষণে সহপাঠীদের নিয়ে ছোট্ট একটি গল্প বলেছিলাম—কিভাবে একদিন সবাই মিলে বিজ্ঞান মেলায় পুরস্কার জিতেছিলাম।
শ্রোতারা হাসলো, আবার আবেগেও ভেসে গেল।
ধন্যবাদ ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন
একটি বিদায়ী ভাষণে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ অপরিহার্য। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অবদান ছাড়া আজ আমরা কিছুই হতে পারতাম না। অভিভাবকরা আমাদের জন্য কত কষ্ট করেছেন, তাদেরও মনে করিয়ে দেওয়া উচিত।
আমি তখন বলেছিলাম: “আমাদের শিক্ষকরা শুধু বইয়ের পাঠ নয়, জীবনের পাঠও শিখিয়েছেন। আর অভিভাবকরা আমাদের প্রতিদিন উৎসাহ দিয়েছেন।”
শিক্ষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গি
বিদায়ের মুহূর্তে শুধু আবেগ নয়, ভবিষ্যতের দিকেও নজর রাখা জরুরি। শিক্ষা আমাদের সামনে নতুন দরজা খুলে দেয়। আমি মনে করি, ভাষণে বলা উচিত—“আজ আমরা বিদায় নিচ্ছি, কিন্তু আগামী দিনে আরও বড় স্বপ্ন পূরণের পথে হাঁটবো।” এই ধরনের বাক্য শ্রোতাদের অনুপ্রাণিত করে।
নৈতিকতা ও জীবনের শিক্ষা
শিক্ষা শুধু বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সততা, শৃঙ্খলা, পরিশ্রম আর দায়িত্বশীলতা—এসব গুণ আমাদের সফল মানুষ হতে সাহায্য করবে। আমি বিদায়ের সময় প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, “ভবিষ্যতে যেখানেই থাকি, আমার শিক্ষকদের দেখানো নৈতিকতার পথ কখনো ভুলবো না।”
বিদায় উপলক্ষে দোয়া ও শুভকামনা
একটি সুন্দর ভাষণের শেষ অংশ সবসময় আশীর্বাদ ও শুভকামনায় ভরা থাকে। আমি বলেছিলাম: “আমরা সবাই যেন আগামী দিনে ভালো মানুষ হতে পারি, সফল হতে পারি—এই দোয়া করি।” এই বাক্যগুলো সহজ হলেও হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
উদাহরণ: সংক্ষিপ্ত ৫ম শ্রেণির বিদায়ী বক্তৃতা
“প্রিয় শিক্ষক, অভিভাবক ও বন্ধুদের সালাম/শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আজকের এই দিনে আমরা বিদায় নিচ্ছি প্রাথমিক জীবনের স্মৃতি থেকে। আমাদের শিক্ষকেরা শুধু বই নয়, জীবনকেও শিখিয়েছেন। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমরা বন্ধুদের ভুলবো না। আগামী দিনে নতুন স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যাবো। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।”
ভাষণ প্রস্তুতির টিপস
- আগেভাগে অনুশীলন করুন।
- ছোট ছোট বাক্যে বলুন।
- শ্রোতার চোখের দিকে তাকান।
- ভয় পেলে গভীর শ্বাস নিন।
- মনে রাখবেন, হৃদয় থেকে বলা কথাই সবচেয়ে সুন্দর শোনায়।
আমার শেষ পরামর্শ
৫ম শ্রেণির বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং জীবনের এক স্মরণীয় মুহূর্ত। এই বক্তৃতার মাধ্যমে আমরা কৃতজ্ঞতা, স্মৃতি আর ভবিষ্যতের স্বপ্নকে শব্দে বাঁধি। যে কোনো ছাত্র বা ছাত্রী যদি আন্তরিকভাবে এবং সহজ ভাষায় বক্তব্য দেয়, তবে তা সবার হৃদয় ছুঁয়ে যাবে।
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন: ৫ম শ্রেণির বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য কতক্ষণ হওয়া উচিত?
উত্তর: সাধারণত ৩–৫ মিনিটই যথেষ্ট।
প্রশ্ন: কোন ভাষা ব্যবহার করা ভালো?
উত্তর: সহজ, স্পষ্ট ও আবেগময় ভাষা ব্যবহার করা উচিত।
প্রশ্ন: কি বিষয় অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে?
উত্তর: শিক্ষক-অভিভাবকের প্রতি কৃতজ্ঞতা, স্মৃতিচারণ, ভবিষ্যতের লক্ষ্য ও শুভকামনা।
বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প রচনা ২৫ পয়েন্ট। আরো বিস্তারিত জানতে এখানে যান